White Dreams Black Impressions:
10th Solo exhibition of drawing and paintings by Albert Ashok
সাদা স্বপ্ন, কালো মুদ্রণ শীর্ষক আমার দশম একক প্রদর্শনী। স্থানঃ অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্ট, নিউসাউথ গ্যালারি 'বি', কলকাতা। তারিখঃ ১লা সেপ্টেম্বর থেকে ৭ই সেপ্টেম্বর। ২০১৭। প্রতিদিন ৩টে থেকে রাত ৮টা অবধি খোলা।
প্রতিবারই। আমি ছবিতে একটা নতুনত্ব আনার চেষ্টা করি। এবারের প্রদর্শনীতে এই প্রচেষ্টা তীব্র ছিল। আমার ভাবনা ছিল গ্যালারিতে আমার ছবি প্রদর্শন করব যে ছবি মানুষ আগে দেখেনি। একটাও পুরাণো ছবি থাকবেনা। থাকবে আমি কি সৃজন করতে পারি তার প্রকাশ। যে ছবি তাৎক্ষনিক। যে ছবিতে আমার মনন , চিন্তন ও দক্ষতার তাজা প্রকাশ থাকবে। থাকবে আমার শিল্প সৃষ্টির বৈপ্লবিক নিদর্শন।
আমাদের দৈনিন্দিন আটপৌড়ে জীবনে অনেক কিছুই কামনা বাসনা হিসাবে থাকে। প্রতিদিনই সেই বাসনাগুলি জাগরিত হয়। আমরা তা থামিয়ে দিই বা ঘুম পাড়িয়ে রাখি। কারণ, কামনা বাসনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া সবার পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা সামাজিক নাগপাশে আবদ্ধ থাকি। মনে হয়, অদৃশ্য একটা শিকলে আমাদের হাত পা বাঁধা। অথচ স্বপ্নগুলি প্রতিদিন দেখে দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তার আর কোন রং আলাদা দেখা যায়না। আমার কাছে এগুলি সাদা স্বপ্ন। এই স্বপ্ন সকল মানুষের স্বপ্ন। এই স্বপ্ন সত্যের ও বাঁচার বা জীবনের প্রতীক। আমাদের সমাজ পুরাকাল থেকেই সঠিক ভাবে বেড়ে উঠেনি। সম্পত্তির বিবর্তন দিয়ে বড় হয়েছে বা বেড়ে উঠেছে, নারীকে করে রেখেছে ক্রীত দাসী। এই সমাজ অন্যভাবেও বিবর্তিত হতে পারত। বা আমরা এটাকে পাল্টাতে পারি। গোষ্ঠিগত বা সমষ্টিগত ভাবে আমরা বেড়ে উঠতে পারি।আমার ভাবনায় তো আরো খারাপ হত যদি মার্কসীয় দর্শন সত্যই সারা পৃথিবীকে প্রভাবিত করত। মানুষের বাঁচার- আরো ভালো বাঁচার পথ আছে। সেই পথে কবে মানুষ হাঁটবে তাই দেখার অপেক্ষায় এই মানব জাতি বসে আছে।মানুষ হওয়ার জ্বালা এটাই প্রতিদিন আমার যৌনাঙ্গকে আদর দিতে হয়। আমরা তো পশু নই যে বছরে একবার যৌনসঙ্গম হবে। আমাদের প্রতিদিন ভিন্ন ধরণের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কামনা জাগে। এই কামনা স্বতঃস্ফুর্ত ও স্বাভাবিক। এবং সমাজ ও আইনের অতলে, লুকিয়ে, যার যেমন সুযোগ সে করছে। এই সমাজ ও সামাজিক বা রাষ্ট্রের আইন গুলি বিকৃত নয়কি? একটা মানুষের স্বাভাবিক ও মানবিক দিকগুলি দমন করা বিকৃত নয়? আমাদের সম্পর্ক বিলুপ্তিকরণ বা বিবাহ বিচ্ছেদের আইনগুলি বিচারের নামে মানুষের মানবিক ও স্পর্শকাতর জায়গাগুলিতে অবিচার করছেনা? সারা পৃথিবীর ন্যায়ের আদালতগুলি মানুষের প্রতি অন্যায় করছেনা? বিচারের নামে প্রহসন হচ্ছেনা? আর ধুরন্ধর লোকগুলি রাজনীতির নামে শয়তানি করছেনা? শিল্প সৃষ্টির সময় আমার এই ভাবনাগুলি আগে চলে আসে। আমি ভাবনাকে আগে বসিয়ে ছবি আঁকি। হাজার হাজার শিল্পী, কেউ স্বশিক্ষিত কেউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্ট বা পেন্টিং নিয়ে পড়াশুনা করে এসে, হয়ত দু একটা জীবনের প্রথমার্ধে প্রদর্শনী করেছেন, তার পর বহুকাল ছবি আঁকেননা। বলা যেতে পারে, আর্থিক অনটন বা সামাজিক অধঃপতনে, মানুষের শিল্প সংস্কৃতি থেকে মন ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য। বাস্তবিক পক্ষেই, ছবি আঁকা ভাস্কর্য গড়া, ব্যয়সাপেক্ষ। একটা cartridge paper কার্টরিজ পেপারের দাম একটা সাধারণ খাতার কাগজের তুলনায় অনেক বেশী দামী। রং তুলি এখন বাজারে অনেক চড়ে গেছে। তারপর ক্যানভাস কাপড়, ভেতরের ফ্রেম বাইরের ফ্রেম, প্রদর্শনীর খরচ-- ইত্যাদি শিল্পীদের মনকে নিরাশ করে দেয়। এরকম একটা বাংলার শিল্পীদের পরিস্থিতিতে, আমি সবাইকে আবার ছবিতে মন ফেরানোর উদ্দেশ্যে, ছবি এঁকেছি বাজে বা ফেলে দেওয়া কাগজে। কিছু কাগজ আমার ঘরে বছর দশ আগে থেকে নানা বই খাতার ফাঁকে পড়েছিল, আমি সেই ড্যাম্প কাগজে, ছেঁড়াফাটা কাগজে, খবরের কাগজে, কোন আমন্ত্রণের চিঠির উলটো দিকের সাদা অংশে ইত্যাদিতে যেখানে আমার আর্থিক টান কে এড়াতে পারি তেমন কাগজে আমার মাথায় যা এসেছে তাই স্কেচ করে, একটু কন্ঠিখড়ি, কিংবা হালকা জল রং এর ওয়াশ দিয়ে এঁকেছি। গ্যালারিতে ছবি আমি ফ্রেম করে আনিনি। গ্যালারিতে এসেছি আমার মাথায় কি আছে, মান্য বা বিশিষ্ট মানুষদের দেখাতে। সাধারন বোর্ডে মাউন্ট করে ছবিগুলি ঝুলিয়েছি। তাতে আমার আঁকা বা ভাবনা সবাই দেখেছেন। ফ্রেম করে সুন্দরতা আরো নাইবা বাড়ালাম। এইভাবে- বলা যায় আমি একটা নীরব প্রতিবাদ করলাম তামাম ভারতের এই চলমান সমাজের উদাসীনতার বিরুদ্ধে। দেশের শিল্পী সাহিত্যিকরা যদি বাঁচতে না পারে তাদের কর্ম করে সেই দেশের নেতা বা সরকারের প্রতি এক চরম লজ্জা। সেই দেশ তার উন্নতি রহিত। শুধু কয়েকজন মাথাকে দুধ দিয়ে পুষে বাকীদের উপোষে ফেলে দেশের উন্নতি হয়না।এটা সমকালীন ঐতিহাসিক কলঙ্ক।
এই দেশের খবরের মিডিয়া সত্য ঘটনা দেখায়না। নিজেদের লোকদিয়ে তর্ক বিতর্কের নামে ভুল বার্তা দেয় আর মুনাফা তৈরী করে। এ দেশের নেতা মন্ত্রী ও সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার নীতিতে রাজ্য চালায়। আর, আরেক ধরণের মানুষ আছে যারা কিছু পাওয়ার আশায় ভুল কাজকে সমর্থন করে। সাধারণ মানুষ ভুল বার্তা থেকে বেরিয়ে আসার শিক্ষাদীক্ষা নেই। ছবি আমি কোথায় আঁকব ও কাকে দেখাব?
আমার এই দশম প্রদর্শনী সকল শিল্পীর দাবীকে সম্মান জানিয়ে ফ্রেমহীন ছবি করেছি। আর তাৎক্ষণিক ভাবনাকে প্রদর্শনীর বিষয় করেছি।
Bull Rider. Charcoal work, 5 x 4 feet on cartridge paper, Fixative sprayed
Political Rider: juggler and Fool,. Dry Pastel work, 5 x 4 feet on cartridge paper, Fixative sprayed
Naked Dance I,. Dry pastel work, 5 x 4 feet on cartridge paper, Fixative sprayed
Naked Dance II,. Dry pastel work, 5 x 4 feet on cartridge paper, Fixative sprayed
Naked Dance III,. Dry pastel work, 5 x 4 feet on cartridge paper, Fixative sprayed
Naked Dance IV,. Dry pastel work, 5 x 4 feet on cartridge paper, Fixative sprayed
The world, we live in I Water colour on paper, 9 x 11 inches
The world, we live in II, Water colour on paper, 9 x 11 inches
The crack on the Triangle, Water colour on paper, 9 x 11 inches
unnourished penis , water colour on paper 9 x 11 inches
steamy window water colour,
Steamy Window II
আমার এই প্রদর্শনী পরিকল্পিতভাবে করেছিলাম। সাধারনতঃ ১০০ভাগ শিল্পীরা, সারা বছর যা আঁকে, তা বিক্রী করার জন্য গ্যালারিতে নিয়ে প্রদর্শনী করে। তারা যথেষ্ট দক্ষতা দেখিয়ে মানুষের যাতে পছন্দ হয় তেমন করে, মানুষের প্রিয় বিষয় গুলি নির্বাচন করে ছবি আঁকে। সুন্দর করে দামী ফ্রেম দিয়ে বাঁধিয়ে গ্যালারির দেওয়ালে ঝুলায়। ছবিতে বাণিজ্যিক করণ মাথায় রেখেই ছবি আঁকেন শিল্পীরা। এটাই প্রথা। এই শিল্পচর্চায় আপনাকে চিত্তবিনোদন ছাড়া আর কোন কাজ এইসব ছবির নেই। এই সব শিল্পে না থাকে কোন বার্তা, না থাকে কোন উত্তেজক ভাবনা। ভাবনা কুপিত করণের মত চাহিদাও আমাদের দর্শকের মধ্যে নেই। যে সব দর্শককে শিল্পীরা নিমন্ত্রণ করে আনেন তাদেরও কোন বিশেষ ছবি দেখার মতো মানসিকতা নেই। শিক্ষা নেই। তারা ঘরের দেওয়ালে একটা রাধা কৃষ্ণের বা গণেশ বা ঠাকুর দেবতার বাইরে আর যে অন্যরকম ছবি হতে পারে তা ভাবতেও পারেনা। তাহলে শিল্পীরা কার জন্যে ছবি আঁকবে? কিন্তু কাউকে তো এই জগদ্দল পাহাড় যেটা আমাদের বেড়ে উঠতে দিচ্ছেনা তাকে ভাঙ্গতে হবে। আমি এই জগদ্দল পাহাড় ভাঙ্গার দায় নিয়েছি। আমি দেখিয়েছি ছবি ফ্রেম না করে দেওয়ালে ঝুলানো যায়। আমি দেখিয়েছি হরেক বিষয় নিয়ে ছবি। ৮ খানা ছবি ছিল মহিলা মজুরদের। ৯ খানা জ্যামিতিক প্যাটার্ণে মানুষের মুখের ছবি ছিল। ২৪খানা কালি কলমের মনভোলানো স্কেচ ছিল। অবচেতন মনের কিছু ফ্যান্টাসী ছিল। নারী পুরুষের যৌনাঙ্গের ছবি কিছু ছিল। আর বিশাল বিশাল কিছু ড্রাই প্যাস্টেলের উলঙ্গ নাচের ছবি ছিল। আমাদের সমাজ যেমন উলঙ্গ হয়ে নাচে তার বিদ্রুপের ছবি ছিল। ছবিগুলি ছোট বড় নানা সাইজের ছিল। বিমূর্ত ছিল কিছু, বাস্তবিক ধর্মী ছিল কিছু। সবগুলি ছবিই ছিল কাগজে আঁকা। কালি কলম, জল রং, ড্রাইপ্যাস্টেল ইত্যাদিতে। নানা ধরণের বিস্তৃত পরীক্ষা নিরীক্ষার ছবি ছিল। আর কাগজগুলি ছিল ফেলে দেওয়া আমন্ত্রণের চিঠি, বইয়ের তাকে পড়ে থাকা বছর দশের পুরানো ড্যাম্প পরা কাগজ। এর মাধ্যমে আমি বলতে চেয়েছি। যার কাছে ছবি আঁকার কাগজ নেই তিনি আমার মত ছোট ছোট ফেলে দেওয়া কাগজ, খবরের কাগজ আমন্ত্রণের চিঠি ইত্যাদিতে তার মনের ছবি আঁকতে পারেন। শিল্পীরা টাকা উপায়ের জন্য ছবি আঁকে? ব্যবসা করার জন্য ছবি আঁকে? না, তারা ভবিষ্যৎ সমাজের রুপকার? যারা বাণিজ্যিক ছবি আঁকেন তাদের অধিকাংশই একটা দক্ষতা ছবি এঁকে অর্জন করেছেন। কিন্তু বেশীরভাগ মেধাহীন। তাদের মধ্যে পড়াশুনা বা সুন্দরের সন্ধান নেই । আছে কি করে টাকা কামানো যায়। অন্যান্যদের মতো এই প্রদর্শনী করতে আমারও অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এবং খরচ হবে জেনেও আমি প্রদর্শনী করেছি সমাজকে পথ দেখাবার জন্য। একটা দৃষ্টান্ত রাখার জন্য।
প্রদর্শনীতে সপরিবারে ঢুকেই নগ্ন ছবি দেখে বোমাতঙ্কের মত দ্রুত পালিয়ে গেছেন অনেকে। অনেক শিল্পী আমার চেয়েও বয়ো জেষ্ঠ, আমাকে বলেছেন। একটা প্ল্যাকার্ড লিখে দাও, এটা অ্যাডাল্ট ছবির প্রদর্শনী। মানুষ এখনো মধ্যযুগের কুসংস্কার নিয়ে বেঁচে আছে? ভাবলে অবাক হই। টিভিতে কন্ডোমের বিজ্ঞাপন যদি দেশ সপরিবারে দেখতে পারে। প্রত্যেক মানুষ তার লিঙ্গটা নিয়ে পলিগ্যামি খেলতে পারে, আর পরিষ্কার একটা যৌনাঙ্গের ছবি দেখতে অভ্যস্ত নয়? স্কুলে স্কুলে পঞ্চম শ্রেণী থেকে প্রক্রিয়েশন বা বংশবৃদ্ধির অধ্যায়গুলি বাদ দিয়ে দিক। ন্যাকা বোকা আর বজ্জাত ভর্তি দেশ।
আমার এই প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য ছিল ভাবনা আগে বসুক। ভাবনার ছবি আকুক শিল্পীরা। স্টিরীও টাইপ ছেড়ে , মানুষ কি খাবে সে অনুযায়ী ছবি না এঁকে, নিজের মনের কথা ছবিতে শিল্প্রূপ দিয়ে ফোটাক। ছবিটাতে মানুষের আকর্ষণ আসলে এমনিতেই মানুষ সংগ্রহ করতে চাইবে। আর যারা শিল্প ব্যবসায়ী তাদের কাজ ব্যবসা করা। শিল্পী কি ব্যবসা করতে জানা উচিত? না কিভাবে ব্যবসা হয় জানে?
একটা আন্দোলন, ছবিকে উন্নত স্তরে নিয়ে যাওয়ার, শুরু করেছি, এই আন্দোলনের দায়বদ্ধতা আছে প্রত্যেক শিল্পীর। আসুন সকলে আমরা ছবির জগতে বিশ্বের অন্যতম আন্দোলনের শরিকদের সমকক্ষ হই। ছবি হল আমার মনের আয়না। আমার সমাজ ও দেশের আয়না। আমার দর্শণের ফসল।
কন্সেপচুয়াল আর্ট। Conceptual Art, বাংলায় বলতে পারি ভাবনা জারিত শিল্পকর্ম। এই আন্দোলন টা এখন যদি কোন বড় গ্যালারি বা কর্পোরেট হাউস শুনে হাইজ্যাক করে নেবে। বড় বড় রাঘব বোয়াল ছোট মাছ খেয়ে ই বাঁচে। আমাদের বাংলাতে আমি দেখেছি বিক্ষিপ্ত ভাবে অনেকেই একটা দুটো করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন। এই আন্দোলনের সংজ্ঞা হল Conceptual art is art for which the idea (or concept) behind the work is more important than the finished art object। আজকে আমরা এমন এক সমাজে বাস করি, বস্তুর চেয়ে ভাবনা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকায় এই আন্দোলন ষাটের দশকে শুরু হয়েছিল। এখন শুধু আঙ্গিক বা ফর্ম বা রুপকল্পে, সিগনেচার আর্টে ছবির পৃথিবী খুশী নয়। আপনি ছাঁচে প্রতিমা বানিয়ে যাবেন আর আর্টিষ্ট হিসাবে হাপরে বাতাস দেবেন। যুগ চলে গেছে।সারা ভারতের বিভিন্ন গ্যালারিতে বার্ষিক প্রদর্শনী ছাড়া Conceptual Art এর সন্ধান বিরল। আমার জানা অগ্রজ শিল্পীদের মধ্যে পার্থপ্রতীম দেব, সমীর আইচ তাদের কাজে অনেক বেশী সংখ্যক কনসেপচুয়াল আর্টের নমূনা পাওয়া যায়। কিন্তু বিস্তৃতভাবে আমার আগে ৮০ খানা ছবি নিয়ে কোন একক প্রদর্শনী সম্ভবতঃ করেননি কেউ। এই প্রদর্শনীটা একটা উলঙ্গ নৃত্য। Naked Dance. একটা প্রতিবাদ সামাজিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে।
না হলে এত বিষয় থাকতে আমি উলঙ্গ নৃত্য কেন আঁকব? কষ্টার্জিত এতগুলি টাকা দিয়ে আমি নিশ্চয়ই ছবি বিক্রীর ধান্ধা করতাম।
ছবিটা যে মুহুর্তে ফ্রেম হয় সে মুহুর্তে তার মধ্যে যতই আগুন থাকুক, ঠান্ডা পণ্য হয়ে যায়। লোকে সেটা দেখে ভাবতে থাকে কোথায়, তার ঘরের কোন দেওয়ালে, না বারান্দার পথে না বাথরুমের সামনে ফিক্সড করবে। শিল্পীর ভাবনা, রুপ, ইত্যাদি সব লহমায় নষ্ট হয়ে যায়। অবশ্যই, যারা সুন্দর করে দামী ফ্রেম দিয়ে বাঁধিয়ে ছবি প্রদর্শনী করে তারা এত মেধা, দর্শন, আন্দোলন বুঝেনা। তারা গরম গরম নোট বুঝে। আমি সে পথে হাটিনি। আমার গ্যালারিতে এসে মানুষ আলাদা এক জগতের স্বাদ পেয়েছে।সন্ধান পেয়েছে। খাতায় অকপটভাবে লিখে গেছে। আমার ভাবনাটাকে, দর্শনকে ছুঁয়ে গেছে। এই নিরিখে আমার ছবি প্রদর্শনী একটা অধ্যায় সৃষ্টি করলো ভারতীয় চারুকলার ইতিহাসে। অনেক বিদগ্ধ মানুষ এটা বলে গেছেন আর আমার ও দাবী।
White Dreams, Black Impressions শিরোনামে আমার দশম একক ছবি প্রদর্শনীর সূচনা সুন্দর ভাবে হল। আমি খুব খুশী। ভয় ছিল ও শুরুর দিকে নানাজনে নানা মন্থব্য করছিল, যে আমি খুব সাহসী। বিশিষ্ট অতিথিগন যারা সূচনা করতে এসেছিলেন তারা আমার সততা ছবির প্রতি -- স্বীকার করে গেছেন। যারা সূচনা করতে এসেছিলেন, তারা ওই মুষলধারে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে উপস্থিত হয়ে বললেন। তোমার জন্য আসতে পেরেছি। আমার জন্য এসেছেন- স্বাভাবিক কারণেই আমি কৃতজ্ঞ। কার্তিক আইচ, তাপস মহাপাত্র, রত্না মজুমদার, শুকতারা বর্ধন তারা আমার পাশে থেকে নানা কাজ করে দিয়ে গেছেন এ ঋণ ভুল্বার নয়। এছাড়া গোরা দা আমার ছবিগুলি দেওয়ালে ঝোলাবার জন্য অক্লান্ত খেটেছেন। সবাই এসেছিলেন । আমাকে ঋণী করে গেছেন। আমি কৃতজ্ঞ।
প্রথম দিন, খুবই ভাল লাগল। সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা।
'সাদা স্বপ্ন কালোমুদ্রণ' শিরোনামে এটা আমার দশম একক ছবি প্রদর্শনী। সাদা কালো জগৎ, বা রঙ্গিন জগৎ এর গল্প আমরা অনেক শুনি। কিন্তু কখনো আমি কি আমার কথা শুনি? আমাকে বোঝবার চেষ্টা করি? আমি কি চাই , আমার প্রতিবন্ধকতা কোথায়? আমার সাথে কারা চারিদিকে আসল নকল মুখোশ পরে ঘিরে আছে?
এমনই কিছু কথা আমার উপলব্ধিতে চিত্রভাষায় ফোটার জন্য উন্মুখ ছিল। বাচ্চা কখনো অনেক দাবী করে বসে, বায়না হিসাবে। বাবা মায়ের ক্ষমতা সীমিত। আর্থিক আনুকুল্যতা থেকে পাড়াপড়শীর চোখ টাটানো- রাজনীতির দাদাদের নজর সবই ভয়ের। সাধারণের বাঁচার জায়গাটা অনেক ছোট ও গন্ডীবদ্ধ করে দেওয়া আছে। ইচ্ছা করলেই বাচ্চার বায়না মেটানো যায়না। তবু দরদ বা দয়া তো দেখাতে হয়ই। ঠিক এমনিই ভাবে নানা টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে আমার এই উপলব্দধির কথা ফুটে উঠেছে। সারাদিন কাজ করে নিজের বিশ্রামের সময় আমার তলপেটেও খিদে তৈরি হয়। এই খিদে মেটাবার সুব্যবস্থা আমাদের ভন্ড সমাজ দেয়নি। দেশের আইন ভাঙ্গতে সাধারণ লোকেরা পারেনা। তবু নিজের বন্ধ ঘরে একবার আয়নার সামনে উলঙ্গ হয়ে দেখতে তো ইচ্ছে করে আমার যৌনাঙ্গের কি অসুখ করেছে। এটা আমি নই আমরা , এই মানুষ জাতির সাদা কথা। এই কথা কেউ লেখেনা পড়েনা মুক্তভাবে। লোকে নিন্দে করে। অথচ এই যৌনাঙ্গের মধ্য দিয়েই প্রাণের ইতিহাস সহস্র লক্ষ বছর ধরে বইছে।
গত দশ দিন আগে হঠাৎ স্থির করলাম আমার পুরানো ছবি এই প্রদর্শনীতে দেখাবোনা। পুরো প্রদর্শনী যেই করে হোক নতুন দেখাবো। এই আচমকা দশ দিনে আমার মাথায় যা আসবে তাই দেখাব। হত দরিদ্রতম মানুষ যেভাবে ছবি এঁকে নিজেকে প্রকাশ করে আমিও তেমন অবস্থার মধ্য দিয়ে, কি ভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে পারি, একবার পরখ করি। অনেক টেনশন ছিল। একটা বড় গ্যালারীতে কম করেও গোটা ৩০ ছবি ধরে। আমি ক্ষুদে ছবি কত হলে গ্যালারী সাজাতে পারব। অনেক দ্বন্ধ মনের সাথে কাটালাম। আজ শুক্রবার, সব ছবি নিয়ে ৮৩টি ছোট ছোট ছবি আঁকতে পেরেছি। ৬ টি বিশালাকায় পাঁচফুট বাই চার ফুট ড্রয়িং দিয়ে ।
কবি সুবোধ সরকার কে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি আগেও একবার আমার সাথে ছবিও কবিতা এক ফ্রেমে আনার জন্য সাহায্য করেছিলেন। তার একডজন কবিতা যা পাঠকের চোখ থেকে একটু দূরে- প্রণয় জাত - তেমন কবিতারা এখানে স্থান পেয়েছে। এই ছবির সাথে কবিতার মেলবন্ধন অনেক পুরানো ইতিহাস।
একটা শিল্প আরেকটা শিল্পের সাথে মিশলে একটা সংঘাত বা প্রভাব সৃষ্টি করে। নাটকে গান , গানে নাটক, কবিতায় গান গানে কবিতা। চিত্রকরের ছবিতে লেখকের লেখা বা লেখকের লেখায় চিত্রকরের চিত্র-- ইত্যাদি অসম্ভব একে অপরকে প্রভাবিত করে তৃতীয় এক অস্তিত্বের আভাষ দেয়।" Courbet's A painter's Studio, Emile Zola played in cafe Gurrbois are now history. We know Gertrude Stein was to Matisse or Pablo Picasso to Hemingway. Pablo Neruda was to latin American painters." এরকম দৃষ্টান্ত আরো দেওয়া যায়। দুই বা ততোধিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের মিলন মানে অকল্পনীয় সৃজনশীলতা। মন ও আত্মার মিলন, একটু স্বাধীন ও স্বেচ্ছাচারী ভ্রমন। অনেক পূস্তক আছে যেখানে কবি ও শিল্পীদের সম্মেলক কাজ নিয়ে বই মুদ্রণ হয়েছে। তসলিমা নাসরিনের ' ভালবাসার ধূম লেগেছে, একটা সহজ শিল্প চেতনায় কবিতাকে অলঙ্কৃত করে ধ্রুব এষ তসলিমার সাথে জুটি বাঁধেন।খুব সুন্দর একটি নিদর্শন। কলেজ স্টিট পাড়া থেকে ছবি কবিতার যুগলবন্দী করে অনেক প্রকাশনা হয়েছে। যাইহোক ছবি ও কবিতার যুগলবন্দী একটা দারুন সৃজনশীলতার পরিচয়।
১৯৯১ সালে উচ্চমার্গের পত্রিকা সম্পাদক প্রীতীশ নন্দী বোম্বে গ্যালারী ৮৮ তে তার কবিতা ও সমীর মন্ডলের ছবি দিয়ে প্রদর্শনী করে সাড়া ফেলে দেন প্রদর্শনীটি কলকাতায়ো হয়।
ভাল বা মন্দ সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের একটা আত্মা। তারা একে অপরকে না জড়িয়ে বাঁচতে পারেনা।
সমস্ত কিছু র পরে দর্শক ও যারা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড নিয়ে চর্চা করেন তাদের বিচারের কাছে তুলে দিলাম।
প্রদর্শনী কক্ষে অনেক বিদেশী এসেছিলেন আমি কাউকে কিছু বলিনি । গতকাল স্পেনের দুই মহিলা তরুণী স্বেচ্ছায় আমার কমেন্ট বক্সে কমেন্ট লিখে গেলেন। উনারা চলে যাওয়ার পর দেখলাম উনারা স্পেন থেকে এসেছেন, নাম ফোন নাম্বার দিয়ে গেছেন। মানে তারা খুশী হয়েছেন এই প্রদর্শনী দেখে । তারা হয়ত আশা করেননি এখানে এই রকম একটা প্রদর্শনী হতে পারে। তাদের কমেন্ট আমি এখানে দিলাম আপনার দেখুন।
Congratulations for the exposition! We think that political arts are really necessary nowadays to achieve the freedom in the minds of the society. We are really lucky to find this gallery and to observe that these are people fighting for the gender equality and freedom to decide. We love the revolutionery art. Thank u. Marie and Zalurie (The 2nd name I could not read properly)
বিশিষ্ট কবি, অনুবাদিকা ও আমার একজন শিল্পসম্পৃক্ত কর্মকাণ্ডের বন্ধু। জয়া চৌধুরী। তিনি ব্যস্ততার মধ্যেও গতকাল এসেছিলেন। তার কমেন্টও আমার এই প্রদর্শনীর সমর্থন। তাই উনার কমেন্টও এখানে পোষ্ট করছি।
Amazing! The first expression while I saw the subject. I think the most Important dilemma we fight for nowadays the role of man-woman in this era. And, its been depicted so nicely here! Being a fan of albert Ashok's painting I can invite all my friends and has to come and appreciate.
No comments:
Post a Comment